Friday, November 24, 2023

নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না: প্রধানমন্ত্রী

SHARE

 

নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না: প্রধানমন্ত্রী



আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে তার পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার সকালে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভার শুরুতে তিনি একথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের জনগণ। কেউ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে তার পরিণতি ভালো হবে না।

“২০১৪ সালে আত্মবিশ্বাস ছিল না বলেই জ্বালাও-পোড়াও করে তারা নির্বাচনে আসেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অপবাদ দিলেও কেউ এখন পর্যন্ত অনিয়মের একটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি।”

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চারদিনে ৩ হাজার ৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

৩০০টি আসনের বিপরীতে বিপুল পরিমাণ এই আবেদন থেকে বৃহস্পতিবার কয়েকটি বিভাগের সংসদীয় আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।

পর্যায়ক্রমে আগামী কয়েকদিনের বৈঠক থেকে অন্য আসনগুলোর জন্য মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে।

গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিল। চারদিনে ঢাকা বিভাগে ৭৩০টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৫৯টি, সিলেট বিভাগ ১৭২টি, ময়মনসিংহ বিভাগ ২৯৫টি, বরিশাল বিভাগে ২৫৮টি, খুলনা বিভাগে ৪১৬টি, রংপুর বিভাগে ৩০২টি ও রাজশাহী বিভাগে ৪০৯টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়। এতে দলটির আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা।


বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান

বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণায় অটল থাকার মধ্যে রাজনীতিতে ঘটছে নানা নাটকীয়তা।

দলটিকে রেখেই ভোটে চলে আসার ঘোষণা দিয়েছেন এক দফার যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। সঙ্গে আছে নিবন্ধিত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন) ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। এরাও বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে ছিল এতদিন।

যেসব দল ইতোমধ্যে নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিয়েছে তাদের সাধুবাদ জানিয়ে বিএনপিকেও নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, “তারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বান জানাই। নির্বাচনে আসেন, কার কত দম সেটা আমরা দেখি; জনগণ কাকে চায় সেটা আমরা যাচাই করে দেখি। আসলে নির্বাচনে আসার মত তাদের আস্থা-বিশ্বাস নাই।

“নির্বাচন নিয়ে যারা এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে তাদের বলব আপনারা আসেন নির্বাচনে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।”

সরকার নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “এটুকু বলতে পারি এবারের নির্বাচন… আওয়ামী লীগের আমলে প্রত্যেকটা নির্বাচন অবাধ-নিরপেক্ষ হয়। এবার আমি বারবার নির্দেশনা দিয়েছি জনগণের ভোটের অধিকার, আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব, জনগণের সে অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

“আমরা নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করব না। নির্বাচন কমিশন অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে সেটাই আমরা চাই।”

‘কিছু দুমুখো মোড়ল আছে’

তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর; বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর।

রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি তারিখ ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর।

এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ ও সংস্থাগুলো। নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক আসতে চাইলে সরকারের তরফ থেকেও কোনো ‘আপত্তি’ নেই বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

“আমরা নিজেরা আহ্বান করেছি, যদি পর্যবেক্ষক আসতে চায় আসবে। এখানে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই। কারণ আমাদের জনগণের ভোট চুরি করা লাগবে না, জনগণের আস্থা-বিশ্বাস আমাদের উপর আছে।”

রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এটাকে ধ্বংস করার জন্য তাদের নানা প্রক্রিয়া। এখন রাজনৈতিকভাবে তারা পারেনি, এখন অর্থনৈতিকভাবে কীভাবে চাপে ফেলবে সেই প্রচেষ্টা।”

দেশের গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার চক্রান্ত চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পৃথিবীর কিছু মোড়ল আছে। যেখানে তাদের সমর্থন, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হলেও সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন না, আরেক জায়গায় যদি হয় সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ রকম দুমুখো, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাটাকে নসাৎ করার একটা চক্রান্ত।”

‘নৌকা মার্কায় ভোট দিন’

নির্বাচনে যাকে খুশি তাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “এটাই আমাদের স্লোগান। তারপরও আমি নৌকায় ভোট চেয়ে রাখলাম, কারণ এটা আমাকে চাইতেই হবে।

“আপনাদের ভোটের অধিকার আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রয়োগ করবেন। যাকে খুশি তাকে ভোট দেন, আমাদের সে ব্যাপারে কোনো কথা নেই। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আমি আপনাদের কাছে দাবি করব, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেন। কিন্তু সম্পূর্ণ জনগণের ইচ্ছা, ভোটারের ইচ্ছা; যাকে খুশি তাকে দিতে পারে।”

তিনি বলেন, “নৌকা মার্কা যখন সরকারে এসেছে, তখন এ দেশের মানুষের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন হয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে, রাস্তা-ঘাট, পুল-ব্রিজ সব আমরা নির্মাণ করে মানুষকে একটা আধুনিক, উন্নত জীবন দেবার পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেকটা আমরা সাফল্য অর্জন করেছি। আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, ভবিষ্যতেও আমাদের এগিয়ে যাবার পালা।

“কাজেই নৌকা মার্কা থাকলে যে মানুষের জীবনে শান্তি থাকে, সমৃদ্ধি আসে, জীবন উন্নত হয়, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। নিশ্চয়ই দেশবাসী সেই বাস্তবতা মাথায় রেখে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থী জয়যুক্ত করে তাদেরকে সেবা করার সুযোগ দেবেন।”


সুত্রঃ bdnews24

নির্বাচন
আওয়ামী লীগ
শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন

মনোনয়ন বোর্ডে সভা
SHARE

Author: verified_user

0 $type={blogger}: